কুলাউড়ার উচাইল গ্রামের জমিদার বাড়ী নামে খ্যাত কমলাচরন দেবের বাড়ীটি একটি প্রতারকচক্র জ্বাল দলীলের মাধ্যমে দখল করার পায়তারা করছে।
ডেস্ক রিপোর্টঃ মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার উচাইল গ্রামে এক ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়ী কমলা চরন দেবের বাড়ীটি উচাইল বাবুর বাড়ি নামে খ্যাত। এই বাড়ীটি এক শ্রেণির প্রতারকচক্র অবৈধভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় ৪০ কেয়ার জায়গা বিক্রি করেছে অবৈধ ভাবে।
কমলা চরণ দেব ছিলেন খুব প্রতাপশালী জমিদার, ন্যায় বিচারক হিসেবে তাঁর অনেক খ্যাতি ছিল । তাঁর পুত্র , প্রমোদ চন্দ্র দেব ব্রিটিশ বিরোধী রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে পথে নেমেছিলেন । স্বদেশী আন্দোলনের কারণে কয়েক বছর পরীক্ষা না দিয়ে ১৯২১ সালে হবিগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ করেন । তারপর সিলেটের এমসি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও বিএ পাশ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন শাস্ত্রে ভর্তি হন । সেখান থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে পাশ করে বিজ্ঞ আইনজীবী হিসেবে মৌলভীবাজার শহরে প্রতিষ্ঠিত হন । পাশাপাশি পৈত্রিক মিরাশদারিও দেখা শোনা করেন । তিনি কমলা চরণ দেবের বড় সন্তান এবং নির্লোভ চরিত্রের কারণে নিজের বাড়ি, পরিবার ছাড়িয়ে সবার কাছে শ্রদ্ধা কুড়াতে পেরেছিলেন । তাঁর ছিল পাঁচজন পুত্র সন্তান । সকলেই যার যার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন । বড় ছেলে পরিমল বিকাশ দেব সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক ছিলেন । তাঁর মেজো ছেলে সুশীতল দেব সরকারি চাকরিজীবী ছিলেন । সেজো ছেলে পুষ্পিতা রঞ্জন দেব ডানকান কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন । চতুর্থ জন বিখ্যাত সাহিত্যিক সুনির্মল কুমার দেব মীন এবং কনিষ্ঠপুত্র এডভোকেট সুবিমল কুমার দেব নামকরা আইনজীবী ছিলেন।
এ ভাবেই এদের সবার কারণে কুলাউড়ার মানুষ বাবুর বাড়ি বলতে এই বাড়িটিকেই চিনতো । প্রমোদ চন্দ্র দেব মারা গেলে কয়েক বছর গ্রামের বাড়ির অভিভাবকত্ব করেন সুশীতল দেব । পরবর্তীকালে তাঁর ছোটভাই সুবিমল দেব আইনজীবী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলে গ্রামের বাড়ির দায়িত্ব তাঁর ওপরেই বর্তায় । তিনি এ কাজ আমৃত্যু করে গেছেন । বলা প্রয়োজন, যে যখন দায়িত্ব নিয়েছে, পরিবারের সবাই তাঁকে মেনে নিয়েছেন বলে জানা গেছে। কখনো এ সব নিয়ে কোন্দল হয়নি । একে একে বড় তিন ভাইয়ের মৃত্যুর পর ছোট দুই ভাই সুনির্মল দেব ও সুবিমল দেব স্বপরিবারে আমেরিকায় প্রবাসী হন। সেখানেই মৃত্যু বরণ করেন সুবিমল দেব । মৃত্যু র আগে কাউকে অভিভাবক হিসেবে মনোনীত করে যাননি তিনি । সম্পত্তি ভাগ বাটোয়ারাও করেননি। সব এজমালি অবস্থায় পড়ে আছে। কিন্তু এই প্রথমবার এখানে দেখা গেল কেউ কাউকে মানতে নারাজ । মন কষাকষি থেকে শুরু করে নানা প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে লাগলো । এ সব কর্মকান্ড একটি জমিদার পরিবারে এটা খুব পীড়াদায়ক বললেন এ গুত্রেরই এক গুণিজন । তাই এক পর্যায়ে এ বংশের কয়েকজন বিষয়টির সভ্য সমাধানের জন্য আদালতে বাটোয়ারা মামলা করলেন মামলাটি চলমান আছে।
গতবছর পারিবারিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে দুর্গাপূজার আয়োজন করে পরিবারের লোকজন । সেখানে সেই পরিবারের অন্যতম গুণিজন বিশিষ্ট সাহিত্যিক সুনির্মল দেব সভাপতি ও সাংবাদিক সৌমিত্র দেবকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিল। তখন সকলের সম্মতিক্রমে মন্দিরের জন্য ৫ শতক ভূমিও দান করে ছিলেন । এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান । এ গ্রামের হিন্দু মুসলমান সব সমাজের লোকজন সেখানে সভার সাথে সবার সম্পৃতির সম্পর্ক রয়েছে ।সেখানের সবাই জানেন বাটোয়ারা মামলার কথা ।
কিন্তু হঠাৎ কয়েকদিন পুর্বে সেই বাড়ী নিয়ে এক নাটকীয় গঠনা গটে বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ ধনকুবের আজম যে চৌধুরীর লোকজন সেই ঐতিহ্যবাহী বাড়ির সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে । সেখানে একটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রেখেছে এ ভুমির খরিদা সুত্রে মালিক আজম জে চৌধুরী
আমি বুঝে উঠতে পারছি না , এটা কি করে সম্ভব । এই এলাকারই কৃতি সন্তান এই চৌধুরী সাহেব তো ফালতু লোক নন। তাঁর একটা রেপুটেশন আছে। এই জমির মালিক কমলা চরনের উত্তরাধীকারীরা উচাইল গ্রামের জমিদার বাড়ী সম্পদ কিন্তুু এ জমি জমির সত্তাধীকারীরা বিক্রি না করে কারা জ্বালিয়াতি মাধ্যমে বিক্রি করলো আর কারা ক্রয় করলো। কেন করলো। আর কেন বা একজন শিল্পপতি এ ভূমিতে তাঁর নামে ঝান্ডা তৈরি করলেন। আমার জানামতে এ সম্পদ মামলাধীন জমির মালিকরা এ জমি বিক্রি করেননি। বিক্রি না করলে তিনি কার কাছ থেকে খরিদ করলেন! যেহেতু এটা এজমালি জমি, বাটোয়ারা হয় নি, মামলা চলছে ।এই জমি কি তিনি ভুতের কাছ থেকে কিনেছেন ? এ নিয়ে নানা প্রশ্ন জাগে সাধারণ মানুষের জনমনে। আজম জে চৌধুরী একজন শিল্পপতি একজন গুণিজন তার নাম ভাঙ্গিয়ে এ সব কর্মকান্ড খুবই দুঃখজনক। কেন? এ নাটক। কার স্বার্থে। পেচনে কারা রয়েছে। এ রহস্য বের করে নিয়ে আশার দায়িত্ব প্রশাসনের। তা হলে প্রশাসন নিরব কেন? কার স্বার্থে। কেন? এর জবাব সাধারণ মানুষ জানতে চায়।
(সূত্র:মনুকূলের কাগজ)